শর্টকোড মোবাইল নাম্বার কিভাবে নিতে হয়। ১২৫৫০, ৮৮৭০, ১৬২২২ : All Bangla Tricks
২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
সর্বশেষ সব

শর্টকোড মোবাইল নাম্বার কিভাবে নিতে হয়। ১২৫৫০, ৮৮৭০, ১৬২২২

Link Copied!

শর্ট কোড কি?
আমরা সাধারণত যে মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করি সেটা ১১ ডিজিটের। আমাদের ল্যান্ডফোন ৬ থেকে ৯ ডিজিটের। এই বাইরে কিছু শর্টকোড রয়েছে। যেগুলো ৩ ও ৫ ডিজিটের হয়ে থাকে। কম ডিজিটের বলে এগুলোকে শর্টকোড বলা হয়ে থাকে।

শর্টকোড কত প্রকার ও কি কি?
শর্টকোড প্রধানত তিন প্রকারের চালু আছে আমাদের দেশে। যুগের সাথে প্রযুক্তির পরিবর্তন এগুলো বদলে যেতে পারে এবং নতুন নতুন সুবিধা চালু হতে পারে। আপাতত প্রচলিত তিনটা শর্টকোড নিয়ে আলোচনা করা যাক।

বিটিআরসি শর্টকোড:
বিটিআরসি মানে বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরী কমিশন। বাংলাদেশের টেলিকম সংক্রান্ত বিষয়গুলো বিটিআরসি দেখে। সরকারীভাবে ৫ ডিজিটের একটি বিশেষ নাম্বার নেয়া যায় এগুলো ব্যবসায়িক বা কর্পোরেট হাউজের জন্য। এগুলো ফোন কলের জন্য ব্যবহার করা হয়। এগুলোর সুবিধা হচ্ছে এগুলো সহজে মনে রাখা যায়। যেমন রকমারী ডট কম এর শটর্কোড ১৬২৯৭।

সিপি শটর্কোড:
সিপি মানে হলো কনটেন্ট প্রোভাইডার। আমরা জানি যে মোবাইল অপারেটর এর ওয়েলকাম টিউন, কলার টিউন, গান শোনাসহ নানারকম VAS সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকে কনটেন্ট প্রোভাইডার বা সিপিগুলো। এদের একটা শর্টকোড থাকে এগুলো দিয়ে তারা নানারকম রেজিস্ট্রেশন, ভোটিং, পোলিং, কুইজ, কম্পিটিশন করে থাকে। এগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষার আসন বিন্যাস, ফলাফল অনেক কিছুই জানানো যায়। যেমন আমরা ৬১৬১ ব্যবহার করে ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতায় ভোট দিয়ে থাকি।

এমও শর্টকোড:
মোবাইল অপারেটর দের নিজস্ব শটকোড থাকে। এগুলো তারা ৩,৪,৫ ডিজিটে করে থাকে। এর দ্বারা তারা ইন্টারনাল সার্ভিস দিয়ে থাকে। যেমন ধরুন রবি রেডিও ৮০৮০ এই নাম্বারে এসএমএস করে রবি রেডিওতে রেজিস্ট্রেশন করা যায় আবার কল দিয়ে রবি রেডিও শোনা যায়। আবার ৮০৮০৭ এ কল দিয়ে রবি রেডিওর ইসলামিক সেকশন টিউন করা যায়, যেটা রবি ইবাদাত পোর্টাল নামে পরিচিত।

এটা উদাহরণ হিসেবে বলা হলো এভাবে সব কোম্পানীতেই রয়েছে। তবে এগুলো মোবাইল অপারেটর এর বাইরে অন্যরা ব্যবহার করতে পারে না।

শর্টকোডকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়:

ছোট নাম্বার ব্যবহার:
বিটিআরসি শর্টকোডে ফোন নাম্বারটি ছোটে হয়ে যায় বলে ব্যবহারকারীদের মনে থাকে। এবং সহজে কল করা যায়। তবে এই সার্ভিস ব্যয়বহুল বটে। বছরে একটা বড়ো অংকের ফি দিতে হয় এই সার্ভিস নেয়ার জন্য।

মেসেজের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন:
আপনার ওয়েবে সাইটে রেজিস্ট্রেশন ফরম্যাটের সাথে এপিআই সংযুক্ত করে এই সেবা চালু করতে পারেন। কখনো যদি মনে হয় আপনার জন্য দূর দূরান্ত থেকে অনেক মানুষের রেজিস্ট্রেশন সম্ভব হবে না। তখন আপনি এই সেবা নিতে পারেন। এতে গ্রাহক ১৬০ ডিজিটের মাধ্যমে মেসেজ পাঠাতে পারে এবং পরে একটি ফিরতি মেসেজও পেতে পারে। এতে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ও সিরিয়াল মেনটেইন করা যায়।

ভোটিং:
ক্লোজআপ ওয়ানের ভোটের কথা আপনারা সবাই জানেন। চার ডিজিটের একটি শর্টকোডের মাধ্যমে আপনি ভোটিং সার্ভিস নিতে পারেন।

কুইজ কনটেস্ট ও কম্পিটিশন:
যেকোনো কুইজ আপনি ঘোষণা দিয়ে তার উত্তর মোবাইল মেসেজ এর মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারেন। এতে করে আপনার প্রমোশনও হতে পারে। সবচেয়ে বড়ো কথা এই সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রে কোনো খরচ লাগে না। প্রমোশনটাই আসল। মানে আপনার সার্ভিসটি সম্পর্কে কাস্টমারকে জানানোর জন্য প্রমোশনাল প্রজেক্ট নিতে হয়।

পরীক্ষার ফলাফল:
পরীক্ষার ফলাফলের মোবাইল সার্চিং এর সাথে আমরা সবাই পরিচিতি। আমরা জানি যে মোবাইলের মাধ্যমে পরীক্ষার ফল জানা যায়। বোর্ড পরীক্ষার পাশাপাশি আমরা কোনো শর্টকোড সার্ভিস প্রোভাইডার এর সাহায্য নিয়ে নিজেরাও নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সেবা নিতে পারি। বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলে ভর্তি পরীক্ষার জন্যে এটা বেশ উপযোগী।

ডাটাবেজ তৈরী:
যেকেউ ইচ্ছা করলে শর্টকোড ব্যবহার করে ডাটাবেজ তৈরী করতে পারেন। মনে করেন আপনার একটা ওয়েবসাইট আছে আপনি সেটা থেকে স্বেচ্ছামূলক সেবা দিয়ে থাকেন। এখন সেখানে রক্তদাতা ও গ্রহীতার জন্য আপনি সহজে সার্চিং বা ডেটা সংগ্রহ করতে চান। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই একটা কাজ করতে পারেন। সেটা হলো আপনি একটা শর্টকোড ব্যবহার করে প্রমোশন চালাতে পারেন, যেমন ধরি, আপনার শর্টকোড ৯৯৮৮ এখন যে কেউ এ নাম্বারে নাম, বয়স, জেলা, রক্তের গ্রুপ লিখে পাঠালে তার নাম একজন ডোনার হিসেবে নিবন্ধন হয়ে থাকবে। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে একটা বিশাল ডাটাবেজ তৈরী হবে বৈকি?

টিকেটিং:
কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপনি টিকেটিং পদ্ধতি চালু করতে পারেন এসএমএস এর মাধ্যমে তবে এই প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলো যদি টিকেটে মূল্য পরিশোধ এর ব্যাপার থাকে তাহলে আপনি এই সুবিধা পাবেন না। যদি বিশেষ সুযোগ বা সৌজন্য এন্ট্রি দিতে চান তাহলে এটা বেশ কাজের। যেমন আপনি একটা ফেয়ারের আয়োজন করলেন। সেখানে কেউ যদি বিশেষ সুবিধা নিয়ে প্রবেশ করতে চায় তাহলে তাকে আপনার সেই চার ডিজিটের নাম্বারে একটি এস্এমএস পাঠাতে হবে। তিনি ফিরতি মেসেজে সাথে সাথে আরেকটি বার্তা পাবেন যাতে লেখা থাকবে যে তিনি মেসেজ শো করে ফেয়ারে প্রবেশ করতে পারেন।

বিশেষ অফার:
আপনি শর্টকোড মেসেজিং অপশন ব্যবহার করে বিশেষ সুবিধা জানিয়ে অফার দিতে পারেন। ধরুন আপনি ঘোষণা দিলেন যে ঈদ উপলক্ষে আপনার শপ থেকে বিশেষ ছাড় দেয়া হবে। শর্ত হলো ৫০৫০ নাম্বারে একটা মেসেজ পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজে ৫-১০ শতাংশ ছাড় বা ক্যাশব্যাক দেয়া হবে। এতে করে কিছু লোক মেসেজ করবে এতে একদিকে আপনার বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে প্রমোশন চালানোর বা নতুন মেসেজ দেয়ার একটা ইস্যু পাওয়া গেলো, যারা এসএমএস পাঠাবেন তাদের একটা ডাটাবেস তৈরী হলো এবং সবচে বড়কথা যারা আপনাকে মেসেজ পাঠালো তারা হলো সত্যিকার অর্থে আপনার পণ্যের বা সেবার ব্যাপারে আগ্রহী, তাতে করে এদেরকে আপনি চাইলে একবছর ৬ মাস পর নতুন কোনো অফার থাকলে মেসেজ দিতে পারবেন। একটা কথা মনে রাখা দরকার। আপনি অপরিকল্পিতভাবে ৫ হাজার লোকের কাছে মেসেজ পাঠানোর চেয়ে সঠিকভাবে ৫শ লোকের কাছে মেসেজ পাঠানো অনেক বেশী কার্যকরী।

আর বাকী থাকলো অপারেটর এর নিজস্ব শর্টকোড। আগে বলেছি এটা অপারেটর তাদের নিজস্ব সার্ভিস ও প্যাকেজ প্রমোট করার জন্য ব্যবহার করে। কিন্তু একটু বুদ্ধি খাটালে এটা আপনি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন ধরুন গ্রামীণে রয়েছে স্টারগ্রাহক, বাংলালিংক এ প্রিয়জন আর রবিতে ধন্যবাদ অফার। এ প্যাকেজের আওতার কিছু কোম্পানীর সাথে মোবাইল অপারেটর এর চুক্তি থাকে চুক্তির আওতায় আপনার শপ থেকে আপনি যখন ৫ বা ১০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করবেন তখন তারাই সেই মেসেজটা একটি এসএমএস এর মাধ্যমে কাস্টমারকে জানিয়ে দেবে। যে আপনি যদি আমাদের ক্লায়েন্ট হোন অমুক দোকানে ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন তার জন্য এখানে একটা মেসেজ দিন। ফিরতি মেসেজটি কাউন্টারে দেখিয়ে আপনি আপনার পাওনা বুঝে নিন।

MD.Mustafizur Rahman Khan
জাহাঙ্গীর আলম শোভন

আপনার যদি আরো কোনো তথ্য জানার থাকে তাহলে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ভিজিট করুন এবং যেকোনো ভিডিওর নিচে কমেন্ট করুন। চ্যানেল লিংক:  ক্লিক করুন 
error: Content is protected !!