বাংলাদেশে আগামী পহেলা জুলাই থেকে অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট আর ব্যবহার করা যাবে না।
এর আগে একাধিকবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি এই সময়সীমা নির্ধারণ করলেও সেটি কার্যকর করতে পারেনি।
তবে এবার এটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর বিটিআরসি।
বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে যেসব মোবাইল ফোন সেট আমদানি বা প্রস্তুত করা হয়নি সেগুলোই হচ্ছে অবৈধ।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম ডিভিশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বিবিসি বাংলাকে বলেন, আসছে পহেলা জুলাই থেকে বাংলাদেশের ভেতরে যেসব নতুন মোবাইল সেট ব্যবহার করা হবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে।
২০১৮ সাল থেকে মোবাইল ফোনের আইএমইআই দিয়ে একটি ডাটাবেস তৈরি করছে বিটিআরসি। এই ডাটাবেসে যদি কোন মোবাইল ফোনসেটের তথ্য না থাকে তাহলে বিটিআরসি চাইলে সেটি বন্ধ করে দিতে পারে।
সেজন্য নতুন ফোন সেট কিনতে হলে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে সেটি বৈধ কি না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বলেন, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম ব্যবহার করে অবৈধ মোবাইল ফোন সেট শনাক্ত করা যাবে।
তবে এখন যারা অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন, সেগুলো ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দেয়া হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন যেসব মোবাইল ফোন সেট আসবে সেগুলো রেজিস্টার্ড হয়ে রেকর্ড থাকতে হবে।
কেন এই নিয়ম?
বিটিআরসির স্পেকট্রাম ডিভিশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বিবিসি বাংলাকে বলেন, মোবাইল ফোন সেট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে।
একদিকে এর নিরাপত্তাজনিত বিষয় রয়েছে অন্যদিকে এর একটি আর্থিক দিক রয়েছে। এই দিকগুলো হচ্ছে:
১. কেউ যাতে অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট আনতে না পারে। দেশে যাতে বৈধভাবে অ্যাসেম্বল বা তৈরি করা যায়।
২. মোবাইল সেটগুলো নিবন্ধিত থাকলে আমদানিকারকরা সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিতে পারবে না।
৩. কারো মোবাইল ফোন ছিনতাই বা চুরি করে অন্য কেউ সেটি বিক্রি বা ব্যবহার করতে পারবে না। চুরি হওয়া সেটগুলো উদ্ধার করা সহজ হবে।
৪. মোবাইল সিম, আইএমইআই এবং জাতীয় পরিচয়পত্র একসাথে ট্যাগিং করা হবে। এতে করে একজনের নামে নিবন্ধিত মোবাইল অপরজনের মোবাইল সেটে ব্যবহার করা যাবে না।
৫. মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কোন অপরাধ সংঘটন হলে সেটির বিরুদ্ধে দ্রুত এবং সহজে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ১৫ কোটি মোবাইল ফোন সেট রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।
এই উদ্যোগ নেবার পর থেকে অবৈধ পথে হ্যান্ডসেট আসার সংখ্যা কমে গেছে বলে উল্লেখ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম।
তবে প্রক্রিয়াটি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বার বার বিভিন্ন কারনে থেকে যাচ্ছে এর বাস্তবায়ন। তবে খুব শীঘ্রই এটি পুরোপুরি কার্যকরী হবে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিট আরসি।