হাজারো নিত্য নতুন ডিজাইন এবং অত্যাধুনিক টেকনলজিতে সয়লাব আমাদের মোবাইল বাজার এবং প্রতিযোগিতার সাথে পাল্লা দিয়ে এই চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনি যখন কোন মোবাইল ফোন কিনতে যাবেন তখন অবশ্যই সেই মোবাইল সম্পর্কিত বিস্তারিত জেনেই কিনতে যাবেন।
কিন্তু ইন্টারনেটের এই অবাধ বিচরণ যুগে ক্রেতারাও অনেক সময় চিন্তায় পড়ে যান কোন মোবাইল কিনবেন এবং কোনটি নয়।
তাছাড়া এমন কিছু ব্লগ এবং ইউটিউব চ্যানেল পাবেন যেখানে তারা সঠিক এবং যৌক্তিক তথ্য আপনার কাছে প্রকাশ করছে না বিভিন্ন কারণে। হতে পারে জ্ঞানের সল্পতা এমনকি অর্থনৈতিক সুবিধা।
আবার আমরা অনেক সময় পুরানো ফোন কিনে থাকি। বিশেষ করে যখন কম টাকাতে ভাল ফোন কিনতে চাই। আর পুরানো ফোনের দাম যাচাই করা হতে শুরু করে কেনা পর্যন্তা জায়গাতে বিক্রয় ডট কমের মত ওয়েব সাইট গুলো সাহায্য করে থাকে।
তবে কিছু বেসিক জিনিষ না জানার কারনে অনেক সময় পুরানো ফোন কিনেও আমরা সমস্যা সম্মুখীন হতে পারি।
কিন্তু এই আর্টিকেল আমি আপনাদের যে মোবাইল ফোনগুলো ভুল করে হলেও কিনবেন না সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো যা আপনাদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব করবে।
এপেলের আইফোনঃ
আপনি হয়তোবা শুনে অবাক হলেন (!) আমি আপনাকে সারা বিশ্বে সমাদৃত আইফোন কিনতে মানা করছি? যেখানে সারা বিশ্বের মানুষ অনায়াসে আইফোন ব্যবহার করে চলেছে কোন সমস্যা ছাড়া। সেখানে আমি আপনাদের মানা করলাম!
আসলে এপলের আইফোনের সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে একটু বেশি পুরাতন মডেলের আইফোন ব্যবহারে। অনেকই ধারণা করে থাকেন আইফোনে নতুন কোন সফটওয়্যার আপডেট আসলে তা সয়ংক্রিয় ভাবে পুরাতন মডেল গুলো সফটওয়্যার আপডেট করে ফেলা সম্ভব, যা নিতান্তই ভুল একটা ধারনা।
তাই অনেকেই আবেগের বশবর্তী হয়ে পুরাতন মডেলের আইফোন কিনে ফেলেন। অফলাইনের পাশাপাশি অনেক অনলাইন মোবাইল মার্কেট প্লেস (যেমন বিক্রয় ডট কম) আছে, সেখানে পুরাতন আইফোন মডেল বিক্রি হচ্ছে হর হামেশা এবং মানুষ অনায়াসে কিনছে সেখান থেকে।
প্রথমদিকে ক্রেতারা না বুঝে কিনে, পরে তাদের ছোট খাটো ভুলের কারণে পস্তাতে হয়। হ্যা অবশ্যই আইফোন কিনবেন যা লেটেস্ট মডেলের হয়।
যেমন ধরুণ, আই ফোন ৫/ ৫ এস, ৬/ ৬এস, ৭/ ৭ এস এই মডেলের আইফোন কেনা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এই মডেলের ফোনগুলো পুরাতন হয়ে গিয়েছে। এমনকি এই মোবাইলের ভিতরে থাকা পার্টস আস্তে আস্তে কার্যহীন হয়ে পড়ে।
বিকল্প ফোন
যদি সম্ভব হয়,আইফোন ১০ সিরিজ থেকে ব্যবহার শুরু করতে পারেন। কারণ, আইফোন ১০ আর, ১১, ১২ ব্যবহার করলে এর পুরাতন হতে আরো বছর খানেক সময় লাগতে পারে।
এল জি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনঃ
এক সময় এলজি খুব চড়া দামে মার্কেটে তাদের মোবাইল পণ্য ছারতো, কিন্তু প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তাদের অনেক বেগ পেতে হয় এবং আস্তে আস্তে তাদের মোবাইলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
যদিও মোবাইল মার্কেটে তাদের আধিপত্য ছিলো বরাবর চোখে পড়ার মত, কিন্তু আফটার সেলস সার্ভিসে তারা বরাবরই ব্যর্থতা থেকে এখনো উঠে দাড়াতে পারে নাই।
এল জি এর মোবাইল পার্টস গুলো সত্যিই খুব দুর্লভ এবং দুষ্কর। যদিও এল জি বরাররের মতই এর নিশ্চয়তা দিয়ে আসছে যে তাদের কাস্টমার সার্ভিস এবং আফটার সেলস সাপোর্ট কিন্তু এটি সব এলাকার জন্যে প্রযোজ্য নয়।
কারণ আপনার শহর বা এলাকায় এল জি এর অরিজিন্যাল জেনুইন পার্টস সহজলভ্য নাই বা হতে পারে। তখন আপনাকে ক্লোন বা ডুপ্লিকেট কোন ভার্সন দিয়ে কোন রকমে কাজ চালাতে হতে পারে।
তাই, এল জি এর মোবাইল ফোনগুলো যতই আকর্ষণীয় এবং সস্তা হোক না কেন ভুলেও এল জি মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
শাওমি’র পোকো সিরিজঃ
শাওমির পোকো সিরিজের কিছু ফোন দুর্দান্ত পারফর্ম করছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে “পোকো এফ টূ”।
কিন্তু এই সিরিজের কিছু মডেল যেমন এক্স-২, এক্স-৩ মোবাইল ব্যবহারকারিদের আশানুরুপ প্রতিক্রিয়া পেতে ব্যর্থ হয়।
পোকো এক্স-২ ফোন যারাই সফটওয়ার আপডেট দিয়েছেন তারাই কোন না কোন বিপত্তিতে পড়েছেন। সফটওয়ার আপডেটের কারণে পুরো ফোনটাই অকেজো হয়ে যায়। যার ফলে অনেকেই লাভের মুখ তো দেখতে পারেন নাই বরং ক্ষতি হয়েছে এবং ব্যাটারিও খুব একটা ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারে নাই। এমনকি পোকো এই সমস্যাগুলো স্বীকার করতে নারাজ ছিলো প্রায়।
যদিও পোকো এক্স-৩ প্রথমে খুব ভালো নাম করলেও একটা সময় পড়ে তা আর ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। কারণ কিছু সময় ব্যবহারের পর তা হ্যাং হয়ে যায় যা রিস্টার্ট হতে অনেক সময় নেয়।
বিকল্প ফোন
তার থেকে কিছু টাকা যোগ করে বাজেট বাড়িয়ে পোকো এক্স-৩ প্রো হাজার গুণে উত্তম কারণ এর প্রসেসর এবং সফটওয়ার অপটিমাইজেশন। যা অনেক দ্রুত কাজ করতে সক্ষম এবং হ্যাং হবার চান্স নেই বললেই চলে।
যারা পোকো এক্স-৩ প্রো পছন্দ করবেন না তারা রেড মি নোট-১০ প্রো অনায়াসেই চোখ বন্ধ করে নিতে পারেন। যার ৬৪ মেগা পিক্সেল ক্যামেরার দারুণ সব ফিচার নিয়ে তৈরি রেড মি নোট-১০ প্রো।
রিয়েল মিঃ
রিয়াল মি ৮ ফোর জি এবং রিয়াল মি ৮ ফাইভ জি দুটোই বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করেছে।
কিন্তু ভুলেও রিয়াল মি ৮ ফাইভ জি কিনতে যাবেন না কারণ তা আনফিসিয়ালি সেই ফোন বাজারে নিয়ে এসেছে যার ভবিষ্যতের কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই আপাতত অপেক্ষা করুন, ভুলেও ভুল সিদ্ধান্ত নিতে যাবেন না।
বিকল্প ফোন
রিয়াল মি ৮ ফোর জি সেটি চাইলে নিতে পারেন কারণ এতে আছে এমোলয়েড ডিসপ্লে। ক্যামেরার আউটপুট তুলনামূলকভাবে ভালো। সফটওয়ার অপটিমাইজেশন অনেক অনেক ভালো, প্রসেসর ভালো পারফর্ম করছে।
আরো কিছু টাকা যোগ করে রিয়েল মি ৭ প্রো ও হতে পারে আপনার জন্যে ভালো অপশন, যা কয়েকদিন আগেই বাজারে এসেছে এবং সবাই এর সুনাম করছে।
স্যামসাংঃ
স্যামসাং গ্যালাক্সি এ ৭২ যা ভুলেও নিবেন না। বরং স্যামসাং গ্যালাক্সি এ ৫২ নিন কম দামে তবুও তা ভালো এবং মানানসই কিন্তু স্যামসাং গ্যালাক্সি এ ৭২ নিয়ে তেমন কোন পজিটিভ রিভিউ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই।
আপনি যদি ক্যামেরার জন্য স্যামসাং গ্যালাক্সি এ ৩২ কিনতে যান তাহলে আমি বলবো আপনি ভুল করছেন এবং ভুল করবেন। কারণ প্রসেসর টি আশানুরুপ ভাল পারফরম্যান্স দিতে পারে নাই।
আশাকরি এই আর্টিকেল আপনাদের মোবাইল ক্রয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করবে।